সিপাহীপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তার ৪ লাখ টাকা ঘুষ দাবি, অতঃপর…

মোজাম্মেল হোসেন সজল: ঘুষ না দেওয়ায় ২২টি পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ২লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা নেয়নি মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সিপাহীপাড়াস্থ প্রধান কার্যালয়। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোন রিসিট ছাড়া টাকা জমা নিয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মাকুহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের লোকজন সিপাহীপাড়া কার্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। কিন্তু তাদের টাকা জমা না নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের এজিএমএস নাইমুল হাসান ৪ লাখ টাকা দাবি করে তাদের কাগজপত্র রেখে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরজমিনে ওই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে সেখানে উপস্থিত মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ফিরোজ আলম ও মাকুহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের ২২ পরিবারের প্রতিনিধি মোসাম্মদ বিউটি বেগম জানান, মাকুহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের ২২টি পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে গত ২ বছর ধরে সিপাহীপাড়া পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয়ে ধরণা দিচ্ছেন। এরপর গত ২রা নভেম্বর বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য সিপাহীপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ২২ পরিবারের পক্ষ থেকে মাকুহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আমির হোসেন খালাসীর মেয়ে বিউটি বেগম আবেদন করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কনসালটেন্ট প্রদীপ বাবু ও পরে এজিএমএস নাইমুল হাসান তদন্ত করে বিদ্যুতের খুটি ও সংযোগ বাবদ ২লাখ ২৫ হাজার টাকা সরকারী ব্যয় নির্ধারণ করেন।

সে মতে, সিপাহীপাড়ার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (এম.এস) গত ১৭ ই নভেম্বর (স্মারক নং-মুপবি/১২/২০১৪/৫৪২৭) একপত্রের মাধ্যমে আগামী ১৭ ই ডিসেম্বররের মধ্যে বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ ও মালামালের মূল্য বাবদ ২লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে বলা হয়। এ চিঠি পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের আগেই বিউটি বেগম ও স্থানীয় মেম্বার ফিরোজ আলম আজ বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে ওই টাকা জমা দিতে যান বিদ্যুৎ অফিসে। কিন্ত অফিসে যাওয়া মাত্রই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএমএস নাইমুল হাসান তাদের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে ৪ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে তাদের তাড়িয়ে দেন। পরে তারা বিদ্যুৎ অফিস চত্বরে অবস্থান নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের খবর দেন।

সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে জিএম ও অভিযুক্ত এজিএমএস নাইমুল হাসান অফিস ত্যাগ করে চলে যান। পরে বিকেল ৪টার দিকে ভুক্তভোগীদের টাকা জমা নেয়।
এদিকে, গ্রাহকদের অভিযোগ, মুন্সীগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসগুলোতে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। আগে আবাসিক মিটার সংযোগ দেয়ার জন্য টেকনিক্যাল কমিটির অনুমতি নিতে হতো। টেকনিক্যাল কমিটির আরইবি গত জুন মাস থেকে সমিতির (ছক নং-২) ধারা মতে স্ব-স্ব ডিজিএমদের মিটার সংযোগ দেয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু সে নির্দেশ কার্যকর না করে ২-৩ হাজার টাকা মিটার প্রতি ঘুষ নিয়ে তারা মিটার দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে সিপাহীপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএমএস নাইমুল হাসান বলেন, তাদের টাকা জমা না নেয়ায় আমার বিরুদ্ধে তারা ঘুষের অভিযোগ তুলেছেন।
এবিষয়ে আগামীকাল বৃহস্পৃতিবার আরইবিতে আলাপ করে বিদ্যুৎ লাইন বরাদ্দের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মুন্সীগঞ্জ বার্তা

Leave a Reply

Please log in using one of these methods to post your comment:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.